কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর জন্ম ১৬ অক্টোবর ১৯৫৬ (২৯ আশ্বিন ১৩৬৩) বরিশাল শহরের আমানতগঞ্জে অবস্থিত রেডক্রস হাতপাতালে। পৈতৃক নিবাস বাগেরহাট জেলার মোংলা থানার অন্তর্গত সাহেবের মেঠ গ্রামে। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে নানাবাড়ি মিঠেখালি গ্রামে ও মোংলায়। ১৯৭৩ সালে ঢাকার )ওয়েষ্ট এণ্ড হাইস্কুল থেকে এস এস সি এবং ১৯৭৫ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচ এস সি পাশ করেন।এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮০ সালে বাংলায় স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি ও ১৯৮৪ সালে স্নাতকোত্তর (বাংলা) ডিগ্রি লাভ করেন।
স্কুল জীবন থেকেই তার লেখালেখির শুরু। সম্পাদনা করেছেন বেশ কয়েকটি সাহিত্যপত্র। 'সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট' ও 'জাতীয় কবিতা পরিষদ'-এর প্রতিষ্ঠাত যুগ্ম সম্পাদক। গীতিকার হিসেবেও তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।১৯৮৯ সালে গড়ে তোলেন 'অন্তর বাজাও' নামে সংগীত দল।
কবির জীবদ্দশায় প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ৭টি- উপদ্রুত উপকুল (১৯৭৯), ফিরে চাই স্বর্নগ্রাম (১৯৮১), মানুষের মানচিত্র (১৯৮৪), ছোবল (১৯৮৬), গল্প (১৯৮৭), দিয়েছিলে সকল আকাশ (১৯৮৮), মৌলিক মুখোশ (১৯৯০)। মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়েছে কাব্যগ্রন্থ- এক গ্লাস অন্ধকার (১৯৯২), কাব্যনাট্য- বিষ বিরিক্ষের বীজ (১৯৯২), গল্পগ্রন্থ- সোনালী শিশির (২০০৫) এবং দুই খণ্ডে রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ রচনাবলী (২০০৫)।
১৯৯১ সালের ২১ জুন (০৭ আষাঢ় ১৩৯৮) ঢাকায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে এই প্রতিভাবান তরুন কবি অকালে মৃত্যুরবণ করেন। বাংলা প্রতিবাদী কাব্যধারায় রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ এক অনিবার্য নাম। মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের উত্তাল কালপর্বে আবির্ভূত এই কবি একাধারে দ্রোহ ও প্রেম, স্বপ্ন ও সংগ্রামের নিবিষ্ট সাধক। মাটি, মানুষ ও ঐতিহ্যের প্রিত আমৃত্যু দায়বোধ তাঁর কাব্যের কেন্দ্রাতিগ শক্তি। সকল অসাম্য, শোষণ, স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ উচ্চারণ তাঁকে পরিচিতি দিয়েছে 'তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক'-এ।