---
অসুস্থতার অসহনীয় কবলে গৃহবন্দী জীবন
চিকিৎসকের পরামর্শ-বিব্রত বিশামে সময় যাপন,
হুটহাট গাঁয়ের বাড়ি ইচ্ছে হলেই আর হয় না গমন।
অনেক কিছু না পাওয়ার ব্যথায় বিপন্ন মন, আহত আশা
ওগো আমার গ্রাম আমার ভালোবাসা।
ঢাকা নগরের নিভৃত গৃহকোণে বসে, চোখ বন্ধ করে দেখি-
গাঁয়ের মাঠভরা ইরিধান, দেহভরে বাসন্তি হিল্লোল, উড়ে চলা পাখি
চোখজুড়ানো সবুজ অরণ্য, যেন পবিত্র প্রার্থনার জায়নামায
আবেগ উচ্ছ্বাসে মাথা নুয়ে স্পর্শ করি, গন্ধ মাখি
ব্যক্ত করি ভালোলাগা, মনের অব্যক্ত লাজ,
এ মাটি, এ সবুজ শ্যামল প্রকৃতি, অদম্য অসীম মাধুরী
প্রাতের সূর্যোদয় বা মধ্য দুপুরের সূর্যলোকের দীপ্ত লহরী
হৃদয় মনে নুপুর নিক্কণ আহা কী তৃপ্তি মরি মরি
তোমা বিনে সুখহীন অসহায় অপূর্ণ প্রত্যাশা
ওগো আমার গ্রাম আমার ভালোবাসা।
গাঁয়ের কাদামাটি ঘোলাজল উন্মুক্ত সমীরণ
জন্মে হেথা ধন্য আমি গর্ব আমার আমরণ
বৃক্ষলতায় পাখির ডাকে অহিংস আলাপন
পরিবেশ ভরা মধুর সংলাপ বাজে গুঞ্জরণ
তোমার বক্ষে এসে মাগো সুশান্ত প্রাণমন
কোথায় পাব এতো আদর সুখশান্তির বাসা
তুমি আমার গ্রাম, আমার ভালোবাসা।
নতুন গড়া গাঁয়ের স্বপ্নের পবিত্র ঈদগাহ ময়দান
সাথে নতুন সংযোগ সড়ক সম্মিলিত ইচ্ছার প্রমাণ
সেথা দাঁড়াই চারদিকে তাকাই সতেজ সবুজের আহবান
কানে বাজে ঈদের নামাযে আল্লাহু আকবর শতপ্রাণে ঐকতান।
সামনে হাঁটি, ঈদগাহের পাশে গাঁয়ের একমাত্র কবরস্থান
বৃকক্ষলতার ছায়ায় অজানা অচেনা নানা ফুল ফলের উদ্যান
আমার পিতামাতা, গাঁয়ের কত স্বজন পরিজনের চির অন্তিম অবস্থান
থমকে যাই কিছুক্ষণ, শুনতে কী পাই মুনকার নকীরের প্রশ্নবাণ-
আছে তো সবকিছু ঠিকঠাক, এখানেই যে হবে শেষ জীবনের বাসা
হে আমার গ্রাম আমার ভালোবাসা।
দুহাত তুলে আল্লাহর পানে
ভিক্ষা মাগি একই ধ্যানে
সব কবরবাসীসহ আমাকে করো মাফ, দয়াময় পাপীজন জেনে
এই গ্রামে জন্ম, এর মাটি হাওয়ায় বাঁচা, এই মাটিই শেষ আশা
হে প্রভু, এই মোর গ্রাম, বার বার ফিরে আসা- আমার ভালোবাসা।